[ADINSERTER AMP] [ADINSERTER AMP]

বিভিন্ন ধরনের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা

বিভিন্ন ধরনের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়। এই পাঠটি “এনসিটিবি মাধ্যমিক ৯ম ও ১০ম শ্রেণির অর্থনীতি” এর  “অর্থনীতি পরিচয়” প্রথম অধ্যায় এর অন্তর্ভুক্ত।

 

বিভিন্ন ধরনের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা

 

আমরা জানি, অর্থনীতি হচ্ছে চয়ন বা নির্বাচনের (Choice ) বিজ্ঞান। এটাও আমরা শিখেছি যে অর্থনীতি সীমিত সম্পদ ব্যবহার করে সর্বোচ্চ উৎপাদন, সর্বোচ্চ ভোগ এবং সর্বোচ্চ কল্যাণ সাধনের জন্য সঠিক পথটি বাছাই করার নিরন্তর চেষ্টা চালায়, সে জন্য অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সর্বদা তিনটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে-

ক) আমরা কী উৎপাদন করব এবং কী উৎপাদন করব না? যেমন: আমরা কি বন্দুক উৎপাদন করব, না কি কাপড় উৎপাদন করব ?

খ) আমারা যা উৎপাদন করতে চাই,তা উৎপাদন করার জন্য কী ধরনের প্রযুক্তি বা যন্ত্র ব্যবহার করব? কাপড় কি আমরা শ্রম নিবিড় প্রযুক্তি তাঁত দিয়ে তৈরি করব, না কি পুঁজি নিবিড় মেশিনে তৈরি করব ?

গ) আমরা যা উৎপাদন করব তা আমরা কাদের জন্য করব ? কারা এটা ভোগ করবেন?

এই প্রশ্নগুলোর উত্তর প্রদানই হচ্ছে একেক দেশের একেক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার প্রধান কাজ। এ ক্ষেত্রে আমরা প্রধানত তিনটি পন্থার সন্ধান পাই এবং সেই হিসাবে পৃথিবীর সমস্ত অর্থনৈতিক ব্যবস্থাগুলোকে প্রধানত: তিনটি মূল পদ্ধতিতে বিভক্ত করা যায়। তবে মনে রাখতে হবে, এসব পদ্ধতির কোনোটিই নিখাদভাবে বিরাজ করে না। সর্বদাই বাস্তবে তারা মিশ্র অবস্থায় বিরাজ করে। নিচে তাদের নিখাদ অবস্থায় পৃথক বৈশিষ্ট্যগুলো আলাদা আলাদাভাবে তুলে ধরা হলো-

 

 

১। বাজার পদ্ধতি বা ধনতান্ত্রিক পদ্ধতি (Market System or Capitalist System )

ক) এই পদ্ধতিতে সমস্ত সিদ্ধান্তই বাজারের যুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত হবে। যেমন- যে পণ্যের চাহিদা বাজারে বেশি হবে এবং যার দাম বেশি হবে, সেটাই বেশি বেশি করে উৎপাদিত হবে। বাজারের আপেক্ষিক চাহিদাই নির্ধারণ করে দেবে উৎপাদনের বিন্যাস

খ) যে প্রযুক্তিতে একটি পণ্য তৈরি করার বাজার নির্ধারিত খরচ সর্বনিম্ন, সে প্রযুক্তি ব্যবহার করেই ঐ পণ্য তৈরি হবে।

গ) বাজারে যে উৎপাদন উপকরণের দাম যেরকম নির্ধারিত হবে,তার মালিকরা ঠিক সেরকম আয় ও ভোগ করবেন।

সুতরাং দেখা যাচ্ছে এ ব্যবস্থায় বাজার দ্বারাই উপকরণের মালিকদের এবং ক্রেতা-বিক্রেতার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নির্ধারিত হচ্ছে কী উৎপাদিত হবে, কীভাবে উৎপাদিত হবে এবং উৎপাদনের বণ্টন কি রকম হবে। ক্রেতা-বিক্রেতা হচ্ছেন ব্যক্তিগতভাবে সমস্ত সম্পদের তথা উৎপাদন উপকরণের ব্যক্তি মালিক এবং বাজারে তাদের আন্তক্রিয়ার মাধ্যমেই এসবের দাম ও অন্য সবকিছু নির্ধারিত হয়।

 

২। নির্দেশমূলক পদ্ধতি (Command System)

এই পদ্ধতিতে কি উৎপাদন হবে, তা নির্ধারণ করে দেয় কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ। এখানে সমস্ত সম্পদ ও উৎপাদন উপকরণের মালিক হচ্ছে রাষ্ট্র বা সমাজ। তাদের প্রতিনিধি হিসাবে কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ই চূড়ান্ত বিচারে কী উৎপাদিত হবে, তার জন্য কী প্রযুক্তি বাছাই হবে, কার কী দাম হবে, কার কী আয় ও ভোগ হবে ইত্যাদি সব নির্ধারণ করে দেন। তাদের এই আদেশ অনেকটা আইনের মতো সকল অর্থনৈতিক খেলোয়াড়কে মেনে চলতে হয়। তাই এই ব্যবস্থাকে নির্দেশমূলক ব্যবস্থা (Command System) হিসেবেও অভিহিত করা হয়। এ ব্যবস্থায় ব্যক্তি স্বার্থ বা মুনাফার চেয়ে সামাজিক স্বার্থ বা সামাজিক কল্যাণকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।

 

৩। প্রথাগত অর্থনৈতিক ব্যবস্থা (Traditional Economic System )

পৃথিবীতে কোনো কোনো প্রাচীন সমাজে যে আদিম অর্থনীতি রয়েছে, সেখানে রাষ্ট্রীয় বা পরিকল্পনা কমিশন বা মুক্তবাজারের কোন শক্তিশালী উপস্থিতি নেই। সেসব সমাজে ব্যক্তি সচরাচর ধর্মীয় মূল্যবোধ বা আবহমানকাল ধরে চলে আসা বাবা-দাদাদের প্রথা অনুযায়ী অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও পরিচালনা করেন। এ সব অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় যেহেতু প্রথা ও সামাজিক বিশ্বাসই সবকিছু নির্ধারণ করে দেয় (অর্থাৎ কী উৎপাদন হবে, কী ভোগ করা যাবে, কোন প্রযুক্তি গ্রহণ করতে হবে, কারা বেশি পাবে, কারা কম পাবে ইত্যাদি সকল কিছু ) সেহেতু এসব অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে প্রথাগত অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বলা হয়।

আমাদের দেশে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বা যুক্তরাষ্ট্রের আমিষ সম্প্রদায়ের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বা কোন কোন ইসলামি দেশে ইসলামি শরিয়া ভিত্তিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে আমরা এই ধরনের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত করতে পারি ।

বর্তমান পৃথিবীতে মূলত বাজার ও পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা এবং কিছু কিছু দেশে সমাজতান্ত্রিক পরিকল্পিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থা এবং ইরান ও সৌদি আরবসহ কয়েকটি দেশে ইসলামি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা চালু রয়েছে বলে ধরা হয়। কিন্তু পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিচার করলে দেখা যাবে এসব দেশে মূল বা প্রধান ব্যবস্থার চরিত্র একটি হলেও এখানে সর্বত্রই অন্য ব্যবস্থাগুলোও অংশত কাজ করে। সে জন্যই চূড়ান্ত বিশ্লেষণে বলা হয় যে পৃথিবীর সব অর্থনৈতিক ব্যবস্থাই শেষ বিচারে একটি মিশ্র ব্যবস্থা । আমাদের বাংলাদেশেও আমরা একটি মিশ্র ব্যবস্থা দেখতে পাই।

এখানে ব্যাক্তি খাতে বাজারই প্রধান নিয়ন্ত্রক, রাষ্ট্রখাতে রাষ্ট্র বা পরিকল্পিত সিদ্ধান্তই প্রধান নিয়ন্ত্রক, ইসলামি প্রতিষ্ঠানগুলিতে (যেমন ইসলামি ব্যাংক) শরিয়ার হুকুমই প্রধান নিয়ন্ত্রক, আবার এই সবগুলো ক্ষেত্রই একে অপরের প্রভাবে প্রভাবান্বিত হচ্ছে। বাজার, আইন, ইসলামি মূল্যবোধ কোনোটিই আমাদের অর্থনীতিতে একক বা একচ্ছত্র প্রাধান্য বিস্তারে সক্ষম হয়নি।

 

 

ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা (Capitalistic Economy)

এই ব্যবস্থায় উৎপাদনের উপাদানগুলো ব্যক্তিমালিকানাধীন এবং প্রধানত বেসরকারি উদ্যোগে, সরকারি হস্তক্ষেপ ছাড়া স্বয়ংক্রিয় দামব্যবস্থার মাধ্যমে যাবতীয় অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এ ধরনের অর্থব্যবস্থাকে ধনতান্ত্রিক বা পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থা বলে । অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষভাগে ফরাসি বিপ্লবের মধ্য দিয়ে সমগ্র ইউরোপে ধনতান্ত্রিক অর্থনীতির সূত্রপাত ঘটে । ক্ল্যাসিক্যাল অর্থনীতিবিদ অ্যাডাম স্মিথ ও তাঁর অনুসারীগণ এ ব্যবস্থা সমর্থন করেন ।

 

ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Capitalistic Economy)

ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থার প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য নিচে সংক্ষেপে উল্লেখ করা হলো :

১। সম্পদের ব্যক্তিমালিকানা : ধনতান্ত্রিক অর্থনীতিতে সমাজের অধিকাংশ সম্পদ বা উৎপাদনের উপকরণগুলো ব্যক্তিমালিকানায় থাকে । ব্যক্তি এগুলো হস্তান্তর ও ভোগ করে থাকে ।

২। ব্যক্তিগত উদ্যোগ : ধনতন্ত্রে অধিকাংশ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যেমন: উৎপাদন, বিনিময়, বণ্টন, ভোগ প্রভৃতি ব্যক্তিগত উদ্যোগে পরিচালিত হয় । এসব উদ্যোগে সরকারের হস্তক্ষেপ কাম্য নয় ।

৩। অবাধ প্রতিযোগিতা : এ ব্যবস্থায় দ্রব্য ও সেবা উৎপাদনে প্রথমে অনেক ফার্ম অবাধে প্রতিযোগিতা করে । ফলে তখন দ্রব্যের দাম কম থাকে এবং নতুন নতুন আবিষ্কার সম্ভব হয় ।

৪। স্বয়ংক্রিয় দামব্যবস্থা : বাজারে ক্রেতা ও বিক্রেতার দরকষাকষির মাধ্যমে দ্রব্যের দাম নির্ধারিত হয় ।

৫। মুনাফা অর্জন : ধনতন্ত্রে উৎপাদক সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জনের জন্য উৎপাদন করে

৬। ভোক্তার স্বাধীনতা : প্রত্যেক ভোক্তা তার নিজস্ব পছন্দ, ইচ্ছা ও রুচি অনুযায়ী অবাধে দ্রব্য ক্রয় ও ভোগ করতে পারে । ভোক্তার চাহিদা ও মুনাফার সুযোগ অনুযায়ী উৎপাদনকারী দ্রব্য সরবরাহ করে ।

৭। আয় বৈষম্য : ধনতান্ত্রিক সমাজে বিত্তবান ও সাধারণ জনগণের আয়ের মধ্যে বৈষম্য বেশি থাকে । ধনতান্ত্রিক অর্থনীতিতে কিছুটা বেকারত্ব অনিবার্য।

৮। সরকারের ভূমিকা : এ ব্যবস্থায় সরকার আইন শৃঙ্খলা রক্ষা, দেশরক্ষা, সম্পত্তির অধিকার রক্ষায় নিয়োজিত থাকে ।

অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক নির্ভরশীলতার মধ্য দিয়ে ধনতান্ত্রিক অর্থনীতির কার্যক্রম পরিচালিত হয় । কেউ নিঃস্বার্থভাবে নয়, বরং প্রত্যেকে নিজ নিজ স্বার্থে অর্থনৈতিক কার্যাবলি সম্পাদন করে ।

 

সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি বা নির্দেশমূলক অর্থনীতি (Socialistic or Command Economy)

সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতিতে সমাজের অধিকাংশ সম্পদ ও উৎপাদনের উপাদানের উপর রাষ্ট্রের বা সমাজের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত থাকে । অধিকাংশ শিল্প-কারখানা ও উৎপাদন প্রতিষ্ঠানের মালিক সরকার বা সমাজ এবং সেগুলো সরকারি বা সামাজিক নির্দেশে পরিচালিত হয়ে থাকে । কোন কোন দ্রব্য, কী পরিমাণে, কীভাবে এবং কার জন্য উৎপাদিত হবে তা সরকার বা রাষ্ট্র নির্ধারণ করে ।

 

সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Socialistic Economy)

১। সম্পদের রাষ্ট্রীয় বা সামাজিক মালিকানা : সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতিতে অধিকাংশ সম্পদ (জমি, কলকারখানা, খনি ইত্যাদি) ও উৎপাদনের উপাদানগুলোর মালিক হলো সরকার, সমবায় প্রতিষ্ঠান, যৌথ সামাজিক দল ইত্যাদি রাষ্ট্রের অধীনে কাজ করে থাকে ।

২। কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা : রাষ্ট্র বা সরকার কেন্দ্রীয়ভাবে সকল পরিকল্পনা করে থাকে। ঐ পরিকল্পনা অনুসারে দেশের উৎপাদন ও বণ্টন পরিচালিত হয়।

৩। ভোক্তার স্বাধীনতার অভাব : সমাজতন্ত্রে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভোক্তারা সরকার ও কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা নির্ধারিত উৎপাদিত দ্রব্যাদি ভোগ করে থাকে। কোনো ভোক্তা ইচ্ছাকৃত অর্থ ব্যয় করে বাজারকে প্রভাবিত করে কোনো কিছু উৎপাদন ও ভোগ করতে পারে না ।

৪। অবাধ প্রতিযোগিতার অভাব : অধিকাংশ ক্ষেত্রে সরকারি উদ্যোগে উৎপাদন পরিচালিত হওয়ায় সেখানে বহুসংখ্যক বেসরকারি উদ্যোক্তার অবাধ প্রতিযোগিতা থাকে না ।

৫। ব্যক্তিগত মুনাফার অনুপস্থিতি : সমাজতন্ত্রে ব্যক্তিগত মুনাফার পরিবর্তে জাতীয় চাহিদা ও সামগ্রিক কল্যাণের জন্য উৎপাদন পরিচালিত হয়ে থাকে। ফলে এখানে ব্যক্তিগত উদ্যোগে কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে না । কৃষি, শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্য সবই সরকারের এবং সামাজিক মালিকানার অধীনে থাকে বলে ব্যক্তিগত মুনাফা থাকে না ।

 

অর্থনৈতিক ব্যবস্থা

 

মিশ্র অর্থনৈতিক ব্যবস্থা (Mixed Economic System )

যে অর্থব্যবস্থায় ব্যক্তিমালিকানা ও বেসরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি সরকারি উদ্যোগ ও সামাজিক নিয়ন্ত্রণ বিরাজ করে তাকে মিশ্র অর্থব্যবস্থা বলে । অর্থাৎ এ অর্থব্যবস্থায় ব্যক্তিগত ও সরকারি উদ্যোগ সম্মিলিত ভূমিকা পালন করে । পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে মিশ্র অর্থব্যবস্থা বিদ্যমান । যথা- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, , জার্মানি, বাংলাদেশ, ভারত ইত্যাদি ।

 

মিশ্র অর্থনীতির বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Mixed Economy)

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মিশ্র অর্থনীতির বৈশিষ্ট্য আলাদা হয়ে থাকে। সাধারণত মিশ্র অর্থনীতির নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলো লক্ষ করা যায়:

১। সম্পদের ব্যক্তিগত, সমবায় ও সরকারি মালিকানা : মিশ্র অর্থব্যবস্থায় ব্যক্তি তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি অবাধে ভোগ করতে পারে ও ক্রয়-বিক্রয় করতে পারে । পাশাপাশি গণদ্রব্য (মহাসড়ক) ও সেবা (স্বাস্থ্যসেবা) উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ প্রধানত সরকার পরিচালনা করে ।

২। ব্যক্তিগত উদ্যোগ : মিশ্র অর্থনীতিতে উৎপাদন, ব্যবসা-বাণিজ্য, বণ্টন ও ভোগসহ অধিকাংশ অর্থনৈতিক কার্যাবলি ব্যক্তিগত উদ্যোগে সংগঠিত ও পরিচালিত হয় ।

৩। সরকারি উদ্যোগ : মিশ্র অর্থনীতিতে ব্যক্তি উদ্যোগের পাশাপাশি সরকারি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় । দেশের মৌলিক ও ভারী শিল্প, জাতীয় নিরাপত্তা ও জনগুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানসমূহ সরকার পরিচালনা করে থাকে ।

৪। মুনাফা অর্জন : মিশ্র অর্থনীতিতে বেসরকারি খাতে অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করার মাধ্যমে মুনাফা অর্জন করা সম্ভব হয় । তবে তা অতিরিক্ত একচেটিয়া মুনাফা নয় ৷

৫। ভোক্তার স্বাধীনতা : এ ব্যবস্থায় ভোক্তা সাধারণ দ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় ও ভোগের ক্ষেত্রে অবাধ স্বাধীনতা ভোগ করে। তবে সরকার প্রয়োজন মনে করলে দ্রব্যের দামের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে এবং প্রয়োজন অনুসারে কোনো দ্রব্যের উৎপাদন কিংবা ভোগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে । যেমন- ধূমপান, মাদকদ্রব্য উৎপাদন ও ভোগ ইত্যাদি ।

বিশ্বে কোথাও বিশুদ্ধ ধনতন্ত্র বা বিশুদ্ধ সমাজতন্ত্র না থাকায় অনেকে মিশ্র অর্থব্যবস্থাকে একটি উন্নত অর্থব্যবস্থা বলে মনে করেন ।

 

ইসলামি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা (Islamic Economic System)

ইসলামের মৌলিক নিয়ম-কানুনের উপর বিশ্বাসকে ভিত্তি করে গড়ে ওঠা অর্থব্যবস্থাকে ইসলামি অর্থব্যবস্থা বলা হয় ।

 

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

ইসলামি অর্থনৈতিক ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Islamic Economy)

ইসলামী অর্থব্যবস্থায় পৃথিবীর যাবতীয় সম্পদ মানবজাতির কল্যাণে ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। এ ব্যবস্থার উল্লেখযোগ্য প্রচলিত বৈশিষ্ট্যগুলো নিম্নরূপ:

১। ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস : ইসলামি অর্থনীতির মূলনীতিমালা ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসীদের ধর্মীয় দর্শন, ধর্মগ্রন্থের বিধান ও ধর্মীয় প্রচলিত প্রথা ও বিধি-বিধান অনুযায়ী প্রণীত ও পরিচালিত হয় ।

২। সুদমুক্ত আমানত : ইসলামি অর্থনীতিতে সুদ গ্রহণের স্বীকৃতি নেই । এখানে ব্যাংক-ব্যবস্থায় সুদমুক্ত আমানতের ব্যবস্থা করা হয় ।

৩। যাকাত ও ফিতরা : এ ব্যবস্থায় যাকাতভিত্তিক বণ্টন ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে যাকাত ও ফিতরার মাধ্যমে ধনীদের নিকট থেকে অর্থ গ্রহণ করে তা দরিদ্রদের মধ্যে বণ্টন করা হয় ।

 

আরও পড়ূনঃ

 

Leave a Comment