[ADINSERTER AMP] [ADINSERTER AMP]

অর্থনৈতিক সম্পদ

অর্থনৈতিক সম্পদ আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়। এই পাঠটি “এনসিটিবি মাধ্যমিক ৯ম ও ১০ম শ্রেণির অর্থনীতি” এর  “অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ ধারণাসমূহ” দ্বিতীয় অধ্যায় এর অন্তর্ভুক্ত।

 

অর্থনৈতিক সম্পদ

আমরা সবাই ‘সম্পদ’ শব্দটির সাথে কমবেশি পরিচিত । আমাদের প্রতিদিনের আলোচনায় অনেকভাবে সম্পদ শব্দটি আসে । যেমন মি. সুজন অনেক সম্পদের মালিক । একজন অর্থনীতিবিদের কাছে সব জিনিস সম্পদ নয় । অর্থনীতিতে সম্পদ হলো সেই সমস্ত জিনিস বা দ্রব্য, যেগুলো পেতে চাইলে অর্থ ব্যয় করতে হয় । সংক্ষেপে আমরা এ দ্রব্যগুলোকে অর্থনৈতিক দ্রব্যও বলে থাকি ।

যেমন- ঘরবাড়ি, আসবাবপত্র, টিভি ইত্যাদি দৃশ্যমান বস্তুগত সম্পদ এবং ডাক্তারের সেবা, শিক্ষকের পাঠদান ইত্যাদি অদৃশ্যমান বা অবস্তুগত সম্পদ । উল্লিখিত জিনিসগুলো পেতে চাইলে অর্থ ব্যয় করতে হবে। কোনো জিনিসকে যদি অর্থনীতিতে সম্পদ বলতে হয়, তবে তার চারটি বৈশিষ্ট্য থাকা আবশ্যক । বৈশিষ্টগুলো হলো-

১। উপযোগ : উপযোগ বলতে বোঝায় কোনো দ্রব্যের মানুষের অভাব মেটানোর ক্ষমতা । কোনো দ্রব্য সম্পদ হতে হলে সেই দ্রব্যের উপযোগ সৃষ্টির ক্ষমতা থাকতে হবে । উপযোগ নেই এমন দ্রব্য বা সেবা মানুষ অর্থ দিয়ে কেনে না ।

২। অপ্রাচুর্যতা: কোনো দ্রব্য সম্পদ হতে হলে তার পরিমাণ ও যোগান সীমিত থাকবে । যেমন : নদীর পানি, বাতাস প্রভৃতির যোগান প্রচুর। এগুলো সম্পদ নয়। তবে শ্রম ব্যবহার করে পানিকে বোতলবন্দি করলে পানিসম্পদে পরিনত হয়। অন্যদিকে জমি, গ্যাস, যন্ত্রপাতি – এগুলো চাইলেই প্রচুর পাওয়া সম্ভব নয় । অর্থাৎ এগুলো আমাদের কাছে অপর্যাপ্ত দ্রব্য। এগুলোও সম্পদ।

৩। হস্তান্তরযোগ্য : সম্পদের আরও একটি বৈশিষ্ট্য হলো এর হস্তান্তরযোগ্যতা । হস্তান্তরযোগ্য বলতে বোঝায় হাত বদল হওয়া। অর্থাৎ যে দ্রব্যের মালিকানা বদল বা পরিবর্তন করা যায়, তা-ই হলো সম্পদ । বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিভাকে অর্থনীতির ভাষায় সম্পদ বলা যাবে না । কারণ তার প্রতিভাকে হস্তান্তর বা মালিকানা বদল করা সম্ভব নয় । আবার টিভির মালিকানা বদল করা যায় বলে টিভি সম্পদ।

৪। বাহ্যিকতা : যে সমস্ত দ্রব্য মানুষের অভ্যন্তরীণ গুণ বোঝায় তা অর্থনীতির ভাষায় সম্পদ নয় । কেননা এর কোনো বাহ্যিক অস্তিত্ব আমরা উপলব্ধি করতে পারি না। যেমন : কোনো ব্যক্তির কম্পিউটারের উপর বিশেষ অভিজ্ঞতা বা জ্ঞান কিংবা কারো শারীরিক সৌন্দর্য বা চারিত্রিক গুণাবলিকে সম্পদ বলা যাবে না । তবে পুঁজিবাদী বাজার অর্থনীতিতে নানাভাবে এগুলোকেও বিক্রয়যোগ্য সম্পদে পরিণত করা সম্ভব।

 

অর্থনৈতিক সম্পদ

 

সম্পদের শ্রেণিবিভাগ

উৎস বা উৎপত্তির দিক থেকে সম্পদ তিন প্রকার । যথা-

১। প্রাকৃতিক সম্পদ : প্রকৃতির কাছ থেকে পাওয়া যেসব দ্রব্য মানুষের প্রয়োজন মেটায়, তাকে প্রাকৃতিক সম্পদ বলে । যেমন- ভূমি, বনভূমি, খনিজ সম্পদ, নদ-নদী ইত্যাদি ।

২। মানবিক সম্পদ : মানুষের বিভিন্ন প্রকার যোগ্যতা ও দক্ষতাকে মানবিক সম্পদ বলা হয়। যেমন- শারীরিক যোগ্যতা, প্রতিভা, উদ্যোগ, দক্ষতা, সাংগাঠনিক ক্ষমতা ইত্যাদি মানবিক সম্পদ ।

৩। উৎপাদিত সম্পদ : প্রাকৃতিক ও মানবিক সম্পদ কাজে লাগিয়ে যে সম্পদ সৃষ্টি হয় তাকে উৎপাদিত সম্পদ বলা হয়। যেমন- কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি, কলকারখানা, যাতায়াত ও যোগাযোগব্যবস্থা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ইত্যাদি মানুষ তৈরি করে বলে এগুলো উৎপাদিত সম্পদ ।

 

 

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পদের বিবরণ

বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম । জনবহুল আমাদের দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় অত্যন্ত কম । উন্নয়নের সাথে দেশের অর্থনৈতিক সম্পদের বিশেষ সম্পর্ক থাকে । এ দেশের অর্থনৈতিক সম্পদের বিবরণ নিচে দেওয়া হলো-

 

ক. কৃষি সম্পদ

বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। এ দেশের বিস্তৃত এলাকা জুড়ে রয়েছে পলিসমৃদ্ধ উর্বর কৃষিজমি । আমাদের জমির উর্বরতা, অনুকূল আবহাওয়া, বৃষ্টিপাত, নদ-নদী প্রভৃতি কৃষি উৎপাদনের সহায়ক। এ দেশে প্রায় ৯০,৯৯০ বর্গ কি.মি. চাষযোগ্য কৃষিজমি রয়েছে । আমাদের কৃষিক্ষেত্রে ধান, গম, ডাল, আলু, তৈলবীজ, ফলমূল প্রভৃতি খাদ্যশস্য এবং পাট, ইক্ষু, চা, তামাক, রেশম প্রভৃতি অর্থকরী ফসল উৎপন্ন হয় । দেশের প্রায় ৬৩% প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষির উপর নির্ভরশীল । জাতীয় আয়ের প্রায় ১৬% ভাগ কৃষি থেকে আসে ।

 

খ. খনিজ সম্পদ

বাংলাদেশ খনিজ সম্পদে তেমন সমৃদ্ধ নয় । এখানে এ পর্যন্ত যেসব খনিজ সম্পদ আবিষ্কৃত হয়েছে, তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ নিচে দেওয়া হলো :

১. প্রাকৃতিক গ্যাস : প্রাকৃতিক গ্যাস বাংলাদেশের প্রধান খনিজ সম্পদ । ২০১৬ সালে পর্যন্ত দেশে ২৬টি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। সেখানে গ্যাসের মোট মজুদ প্রায় ৩৮.০২ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। বর্তমানে কেবল ২০টি গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলিত হচ্ছে। উৎপাদনরত গ্যাসক্ষেত্রগুলো হলো বাখরাবাদ, হবিগঞ্জ, কৈলাসটিলা, রশীদপুর, সিলেট, তিতাস, বেলাবো (নরসিংদী), মেঘনা, সাঙ্গু, সালদা নদী, জালালাবাদ, বিয়ানিবাজার, ফেঞ্চুগঞ্জ, মৌলভীবাজার, ফেনী, বিবিয়ানা ও বাঙ্গুরা ইত্যাদি। এ গ্যাস রাসায়নিক সার তৈরিতে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে, কলকারখানা ও গৃহে এ গ্যাস জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয় ।

২. চুনাপাথর : সিমেন্ট, কাচ, কাগজ, সাবান, ব্লিচিং পাউডার প্রভৃতি উৎপাদনে চুনাপাথর ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশের সিলেটের ভাঙ্গারহাট ও বাগলীবাজার, সুনামগঞ্জের টেকেরহাট, জয়পুরহাটের জামালগঞ্জ এবং কক্সবাজারের সেন্ট মার্টিন দ্বীপে চুনাপাথরের মজুদ রয়েছে।

৩. চীনামাটি : ময়মনসিংহের বিজয়পুর ও নওগাঁ জেলার পত্নীতলায় চীনামাটির মজুদ রয়েেেছ। এটি বাসনপত্র, সেনিটারি দ্রব্য তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয় ।

৪. কয়লা : বাংলাদেশের সিলেট, রাজশাহী, জয়পুরহাট, ফরিদপুর ও দিনাজপুরের বড় পুকুরিয়ায় কয়লার সন্ধান পাওয়া গেছে । সম্প্রতি দিনাজপুরের বড় পুকুরিয়ায় কয়লা উত্তোলন করা হচ্ছে ।

৫. কঠিন শিলা : দিনাজপুর জেলার মধ্যপাড়া এবং রংপুর জেলার রাণীপুকুরে কঠিন শিলার মজুদ রয়েছে । রাস্তা, রেলপথ, বাঁধ নির্মাণ ইত্যাদি কাজে এ শিলা দরকার হয়।

৬. সিলিকা বালু : সিলেট, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও জামালপুরে সিলিকা বালুর মজুদ রয়েছে । এটি কাচ, রং, রাসায়নিক দ্রব্য তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

৭. গন্ধক : বারুদ তৈরি, দিয়াশলাই কারখানা, তেল পরিশোধন প্রভৃতি ক্ষেত্রে গন্ধক লাগে । চট্টগ্রামের কুতুবদিয়া দ্বীপে গন্ধক পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।

৮. খনিজ তেল : সিলেটের হরিপুরে খনিজ তেলের সন্ধান পাওয়া গেছে । দেশের উপকূলীয় এলাকা, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সিলেটে তেল অনুসন্ধানের কাজ চালানো হচ্ছে ।

৯. তামা : রংপুর জেলার রাণীপুকুর ও পীরগঞ্জ এবং দিনাজপুরের মধ্যপাড়ায় কঠিন শিলার স্তরে সামান্য তামার সন্ধান পাওয়া গেছে । বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ও তার, মুদ্রা প্রভৃতি তৈরির জন্য তামা ব্যবহার করা হয়।

 

 

গ. বনজ সম্পদ

বনভূমি ও বনজ সম্পদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সম্পদ । প্রাকৃতিক ও পরিবেশগত অবস্থা ভালো রাখার জন্য যেকোনো দেশের কমপক্ষে শতকরা ২৫ ভাগ বনাঞ্চল থাকা দরকার । কিন্তু বাংলাদেশের মোট বনভূমি মোট ভূখণ্ডের প্রায় শতকরা ১১.১ ভাগ যা অন্যান্য দেশের তুলনায় কম । যেমন, আমেরিকায় শতকরা ৩৩.৮৪ ভাগ, জাপানে শতকরা ৬৭ ভাগ, বার্মায় শতকরা ৬৩ ভাগ এবং ভারতে শতকরা ২৪ ভাগ বনাঞ্চল রয়েছে। বাংলাদেশের সমগ্র বনভূমিকে পাঁচ ভাগে ভাগ করা যায় ।

১. সুন্দরবন : খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট ও বরগুনা জেলার সমুদ্র উপকূলে এ বন অবস্থিত । এর আয়তন প্রায় ৬,০১৭ বর্গকিলোমিটার । এ বনাঞ্চলে সুন্দরী, গরান, গেওয়া, কেওড়া, বাইন প্রভৃতি মূল্যবান গাছ জন্মায় । সুন্দরবনে পৃথিবী বিখ্যাত বাঘ ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার’ এবং বিভিন্ন প্রজাতির মূল্যবান পশু-পাখি বাস করে।

২. চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বনভূমি : এ দুটি জেলার প্রায় ১৩,২৯৫ বর্গকিলোমিটার পাহাড়ি এলাকা জুড়ে এ বন বিস্তৃত । এ বনে সেগুন, গর্জন, গামারি, জারুল, শিমুল, চম্পা, বাঁশ, বেত প্রভৃতি গাছ প্রচুর পরিমাণে জন্মায় ।

৩. মধুপুর ও ভাওয়াল বনভূমি : ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর গড় এবং গাজীপুর জেলার ভাওয়ালের গড় মিলে এ বনভূমির আয়তন প্রায় ১০৬৪ বর্গকিলোমিটার । এখানে শাল, গজারি, বনজাম, কড়ই প্রভৃতি গাছ জন্মায় ।

৪. সিলেটের বনভূমি : এ বনভূমি সিলেট জেলায় অবস্থিত । এর আয়তন প্রায় ১,০৪০ বর্গকিলোমিটার । এখানে শিমুল, বনজাম, বাঁশ, বেত প্রভৃতি বহু রকমের গাছ জন্মায় ।

৫. দিনাজপুর ও রংপুরের বনভূমি : এ বন দেশের উত্তর-পশ্চিমে দিনাজপুর ও রংপুর জেলার বরেন্দ্র ভূমিতে অবস্থিত । এর আয়তন প্রায় ৩৯ বর্গকিলোমিটার । এখানে শাল, গজারি প্রভৃতি গাছ জন্মায় ।

 

ঘ. প্রাণিজ সম্পদ

বাংলাদেশের সর্বত্র বিভিন্ন প্রজাতির পশু-পাখি দেখা যায় । গৃহপালিত পশু-পাখির মধ্যে গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ, হাঁস, মুরগি প্রভৃতি প্রধান । এ ছাড়া সুন্দরবন ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বনাঞ্চলে রয়েছে বাঘ, হাতি, হরিণ প্রভৃতি মূল্যবান জীবজন্তু ও অসংখ্য প্রজাতির পাখি । আমাদের নদ-নদী, বিল, হাওর, পুকুর ইত্যাদি জলাশয় এবং বঙ্গোপসাগরে বিভিন্ন রকম মাছ পাওয়া যায়। এ ধরনের সম্পদ আমাদের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে । কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে। চামড়াশিল্পের কাঁচামালের যোগান দেয় । এ সম্পদ রপ্তানি আয় বৃদ্ধিতে সহায়ক ।

 

ঙ. শক্তি সম্পদ

কলকারখানা, যানবাহন ও যোগাযোগ, যান্ত্রিক চাষাবাদ, গৃহকর্ম প্রভৃতি ক্ষেত্রে শক্তি সম্পদের ব্যবহার অপরিহার্য । কয়েকটি উৎস থেকে শক্তি পাওয়া যায়। এগুলো হলো কয়লা, খনিজ তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, পানি, আণবিক শক্তি, সৌরশক্তি এবং বিভিন্ন প্রকার প্রচলিত জ্বালানি সামগ্রী ।

বাংলাদেশের কয়েকটি স্থানে কয়লার সন্ধান পাওয়া গেলেও তা এখনও উত্তোলন করা শুরু হয়নি । সিলেটের হরিপুরে পেট্রোলিয়ামের সন্ধান পাওয়া গেছে । প্রয়োজনীয় পরিমাণ পেট্রোলিয়াম বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয় । আণবিক শক্তির সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন এখনও এ দেশে শুরু করা সম্ভব হয়নি । বাংলাদেশে শক্তির যোগান বহুলাংশে প্রাকৃতিক গ্যাস, বিদ্যুৎ ও প্রচলিত উপকরণ থেকে আসে ।

আমরা প্রাকৃতিক গ্যাস কলকারখানা, গৃহকর্ম ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করি । এ দেশে পানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় । একে পানি বিদ্যুৎ বলে। পার্বত্য চট্টগ্রামের কাপ্তাই নামক স্থানে কর্ণফুলি নদীর তীরে দেশের একমাত্র পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি অবস্থিত। গ্যাস, তেল, কয়লার সাহায্যে যে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়, তাকে তাপ বিদ্যুৎ বলে । বাংলাদেশে নিম্নলিখিত বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে খনিজ তেল জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয় :

১. গোয়ালপাড়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, খুলনা

২. ভেড়ামারা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্ৰ, কুষ্টিয়া

৩. ঠাকুরগাঁও তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র

৪. সৈয়দপুর তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্ৰ, , নীলফামারী

 

এ দেশের গ্যাসচালিত বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো হলো-

 

১. সিদ্ধিরগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্ৰ, নারায়ণগঞ্জ

২. আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

৩. ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, নরসিংদী

৪. শাহজিবাজার তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, সিলেট

৫. চট্টগ্রাম তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র

 

এ দেশে বিভিন্ন প্রকার প্রচলিত জ্বালানি যেমন, কাঠ, খড়, গোবর, পাটখড়ি, তুষ, পাতা ইত্যাদি থেকেও তাপশক্তি সৃষ্টি হয় । বর্তমান সরকার কুইক রেন্টাল সার্ভিসের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে । উল্লেখ করা দরকার, বর্তমানে বিভিন্ন দেশে বায়ুপ্রবাহ, সৌর তাপ ও জৈব গ্যাসকে শক্তি উৎপাদনের উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা শুরু হয়েছে । আধুনিক বিশ্বে আণবিক শক্তির উপরও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে । আশা করা যায়, অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের এসব উৎস থেকে শক্তি উৎপাদনের প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হবে ।

 

 

চ. পানি সম্পদ পানি

একটি মৌলিক প্রাকৃতিক সম্পদ, যা প্রাণী ও উদ্ভিদের জীবনধারণের জন্য অপরিহার্য । দেশের কৃষিজ বনজ, প্রাণিজ ও শক্তি সম্পদের অস্তিত্ব রক্ষা ও উন্নয়নের জন্য পানি সম্পদ প্রয়োজন । বাংলাদেশে পানির উৎস প্রধানত তিনটি, যথা : ১. নদ-নদী, খালবিল, পুকুর ও সমুদ্র, ২. বৃষ্টিপাত এবং ৩. ভূ-গর্ভস্থ পানি ।

 

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

এ তিনটি উৎসের পানি আমাদের কৃষির জন্য অপরিহার্য । পানির যোগান কম বা বেশি হলে কৃষিকাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অভ্যন্তরীণ জলাশয় ও সমুদ্র এলাকায় রয়েছে মাছ ও অন্যান্য জলজ সম্পদ। নদীর স্রোত থেকে উৎপন্ন হয় পানি বিদ্যুৎ। আমাদের অসংখ্য নদ-নদী, খালবিল ও জলাশয়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এ দেশের যাতায়াতব্যবস্থা ও ব্যবসা-বাণিজ্য । নদ-নদীর পানি ও বৃষ্টিপাত দেশের আবহাওয়া ও পরিবেশের জন্য অনুকূল প্রভাব সৃষ্টি করে । পানি সম্পদের উন্নয়ন ও সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি বাড়বে ।

 

আরও পড়ূনঃ

Leave a Comment