[ADINSERTER AMP] [ADINSERTER AMP]

সুযোগ ব্যয় ও চয়ন

সুযোগ ব্যয় ও চয়ন আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়। এই পাঠটি “এনসিটিবি মাধ্যমিক ৯ম ও ১০ম শ্রেণির অর্থনীতি” এর  “অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ ধারণাসমূহ” দ্বিতীয় অধ্যায় এর অন্তর্ভুক্ত।

 

সুযোগ ব্যয় ও চয়ন

 

সুযোগ ব্যয় : অর্থনীতিতে বহুল ব্যবহৃত একটি ধারণা ‘সুযোগ ব্যয়’। মনে কর তুমি একজন শিক্ষার্থী। তুমি কি প্রতিদিন সব কাজ করতে পারবে? যেমন : তুমি একই সঙ্গে অর্থনীতি পরীক্ষা এবং মাঠে ক্রিকেট খেলা দেখতে পারবে না। তুমি যদি একটি কাজ করতে চাও তবে অবশ্যই ঐ সময়ে অন্য কাজটি করা সম্ভব হবে না । আরও একটি উদাহরণ দেওয়া যাক, মনে কর তোমাদের এক বিঘা জমি আছে । এ জমিতে ধান চাষ করলে বিশ কুইন্টাল ধান উৎপাদন করা যায় । ঐ জমিতে ধান চাষ না করে যদি পাট চাষ করতে চাও তবে দশ কুইন্টাল পাট উৎপাদন করা যেত।

এক্ষেত্রে বিশ কুইন্টাল ধানের সুযোগ ব্যয় হলো দশ কুইন্টাল পাট । সংক্ষেপে বলা যায়, কোনো একটি জিনিস পাওয়ার জন্য অন্যটিকে ত্যাগ করতে হয়- এই ত্যাগকৃত পরিমাণই হলো অন্য দ্রব্যটির ‘সুযোগ ব্যয়’ (Opportunity Cost)। সাধারণত নানারকম সুযোগ ব্যয়ের মধ্যে সর্বোচ্চ সুযোগ ব্যয়টিকেই অর্থনীতিতে সুযোগ ব্যয় হিসাবে গ্রহণ করা হয় ।

 

 

চয়নঃ জসীম একজন কৃষক, তার তিন বিঘার একটি জমি আছে। উক্ত জমির সম্পূর্ণটিতে ধান অথবা গম চাষ করতে পারেন । এছাড়াও জমির কিছু অংশে ধান এবং কিছু অংশে গম চাষ করতে পারেন । উক্ত জমিতে শুধু ধান চাষ করলে ১২০ কুইন্টাল ধান উৎপাদন হতে পারে । আবার শুধু গম চাষ করলে ৮০ কুইন্টাল গম উৎপাদন হতে পারে । এখন তিনি জমিটিতে কী চাষ করবেন সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন । ফসল উৎপাদনের জন্য তার এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াই নির্বাচন বা চয়ন । অর্থনীতিতে সম্পদের স্বল্পতার জন্যই নির্বাচন করতে হয় এবং এটি ব্যক্তিপর্যায়ের পাশাপাশি সমাজ ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সম্পদের স্বল্পতার জন্য হয়ে থাকে ।

 

আয়, সঞ্চয় ও বিনিয়োগ

আয় : উৎপাদনের কোনো উপকরণ ব্যবহারের জন্য উপকরণটি বা এটির মালিক একটি নির্দিষ্ট সময়ে যে অর্থ পায়, তাকে আয় বলে। শ্রমের জন্য প্রাপ্ত আয়কে মজুরি বলে । জমির জন্য প্রাপ্ত আয়কে খাজনা বলে। ধার করা অর্থ বা পুঁজি ব্যবহার করার জন্য পুঁজির মালিককে যে সুদ দেওয়া হয়- সেটি তার আয়। এ ছাড়া উদ্যোক্তা সব খরচ মিটিয়ে যে আয় করেন, সেটিকে মুনাফা বলা হয়।

সঞ্চয় : মানুষ আয় করে ভোগ করার জন্য । ভবিষ্যতের কথা ভেবে বর্তমানে অর্জিত আয়ের পুরোটাই মানুষ ভোগ করে না । আয়ের একটি অংশ রেখে দেয় কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানে । এই রেখে দেওয়া অংশের নাম সঞ্চয় । ধরো, তোমার বাবা এক মাসে দশ হাজার টাকা বেতন পান। নয় হাজার টাকা তোমাদের পরিবারের জন্য ব্যয় করেন। এখানে তোমার বাবা এক হাজার টাকা সঞ্চয় করেন । সঞ্চয়ের এ ধারণাটি সমীকরণ দিয়ে বোঝানো যায় । যেমন : S = Y – C (যখন Y>C)

এখানে, S = সঞ্চয়, Y = আয়, C = ভোগ ব্যয়

ব্যক্তির সঞ্চয় নির্ভর করে মূলত আয়ের পরিমাণ, পারিবারিক দায়িত্ববোধ, দূরদৃষ্টি, সামাজিক নিরাপত্তা এবং সুদের হারের উপর ।

 

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

বিনিয়োগ : মানুষ আয় থেকে সঞ্চয় করে থাকে। সঞ্চিত অর্থ যখন উৎপাদন বাড়ানোর কাজে ব্যবহৃত হয়, তখন তাকে বিনিয়োগ বলে । ধরো, একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি কারখানায় এক লক্ষ টাকার মূলধন সামগ্রী আছে । উৎপাদন বাড়ানোর জন্য আরও পঞ্চাশ হাজার টাকার মূলধন সামগ্রী ক্রয় করা হলো । অতিরিক্ত এ পঞ্চাশ হাজার টাকা হলো বিনিয়োগ । বিনিয়োগের মাধ্যমে উৎপাদনের পরিমাণ বাড়ে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব হয় ।

 

সুযোগ ব্যয় ও চয়ন

 

আরও পড়ূনঃ

Leave a Comment