[ADINSERTER AMP] [ADINSERTER AMP]

বাজার চাহিদা রেখা অঙ্কন

বাজার চাহিদা রেখা অঙ্কন আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়। এই পাঠটি “এনসিটিবি মাধ্যমিক ৯ম ও ১০ম শ্রেণির অর্থনীতি” এর  “উপযোগ, চাহিদা, যোগান ও ভারসাম্য” তৃতীয় অধ্যায় এর অন্তর্ভুক্ত।

 

বাজার চাহিদা রেখা অঙ্কন

 

একজন ব্যক্তির চাহিদা সূচি থেকে ব্যক্তিগত চাহিদা রেখা অঙ্কন করা যায় । তেমনি বাজার চাহিদা রেখাও অঙ্কন করা সম্ভব । বাজারে নির্দিষ্ট দামে সব ভোক্তার ব্যক্তিগত বা ভিন্ন ভিন্ন পরিমাণ চাহিদার সমষ্টিকে বলা হয় বাজার চাহিদা। আমরা বোঝার সুবিধার্থে ধরে নেব একটি বাজারে ভোক্তার সংখ্যা হলো দুজন । নিচে দুজন ভোক্তার ব্যক্তিগত চাহিদা সূচি থেকে চাহিদা রেখার মাধ্যমে বাজার চাহিদা রেখা অঙ্কন করা হলো:

 

 

উপরের সূচিতে দ্রব্যের বিভিন্ন দামে ১ম ও ২য় ভোক্তার চাহিদা দেখানো হয়েছে। এ দুজন ভোক্তার ব্যক্তিগত চাহিদা সূচি থেকে কীভাবে বাজার চাহিদা সূচি তৈরি করা হয়েছে, তা দেখানো হলো । বাজারে কোনো দ্রব্য বিভিন্ন দামে বিভিন্ন ব্যক্তি যে পরিমাণ ক্রয় করতে ইচ্ছুক বা প্রস্তুত থাকে তার সমষ্টিকে যে চাহিদা রেখার সাহায্যে দেখানো হয়, তাকে বলা হয় বাজার চাহিদা রেখা । ১ম ও ২য় ভোক্তার চাহিদা রেখা পাশাপাশি যোগ করে বাজার চাহিদা রেখা অঙ্কন করা যায় ।

 

 

উপরের রেখাচিত্রে বাজারের ১ম ও ২য় ভোক্তার ব্যক্তিগত চাহিদা রেখা হলো যথাক্রমে D, D, ও D2D, দ্রব্যের দাম যখন ৬ টাকা তখন ১ম ও ২য় ভোক্তার চাহিদার পরিমাণ যথাক্রমে ৫ কুইন্টাল ও ১০ কুইন্টাল এবং বাজার চাহিদা হবে (৫ কুইন্টাল + ১০ কুইন্টাল) বা ১৫ কুইন্টাল; যা বাজার চাহিদা রেখায় R বিন্দুতে দেখানো হয়েছে ।

দাম কমে ৪ টাকা ও ২ টাকা হওয়ায় ১ম ও ২য় ভোক্তার ব্যক্তিগত চাহিদা যথাক্রমে (১০ কুইন্টাল + ১৫ কুইন্টাল) বা ২৫ কুইন্টাল এবং (১৫ কুইন্টাল + ২০ কুইন্টাল) বা ৩৫ কুইন্টাল, যা বাজার চাহিদা রেখায় S ও T বিন্দু দ্বারা নির্দেশ করা হয়েছে । এবার আমরা R, S ও T বিন্দু যোগ করে DD চাহিদা রেখা অঙ্কন করি । এটি বাজার চাহিদা রেখা হিসেবে পরিচিত।

বাজারে গেলে আমরা দেখবো বিক্রয়ের জন্য বিভিন্ন দ্রব্য নিয়ে বিক্রেতাগণ দোকান সাজিয়ে রেখেছেন । তবে আমরা এটাকেই যোগান বা সরবরাহ বলবো না। অর্থনীতিতে যোগান বলতে একজন বিক্রেতা কোনো একটি দ্রব্যের যে পরিমাণ একটি নির্দিষ্ট সময়ে এবং একটি নির্দিষ্ট দামে বিক্রয় করতে ইচ্ছুক থাকে তাকে যোগান বলে। উল্লেখ্য- একটি দ্রব্য, একটি নির্দিষ্ট সময় ও একটি নির্দিষ্ট দাম এখানে বিবেচ্য অতএব, উৎপাদক বা বিক্রেতা বিভিন্ন দামে দ্রব্যের যে বিভিন্ন পরিমাণ বিক্রয় করতে ইচ্ছুক, তাকেই অর্থনীতিতে যোগান (Supply) বলে ।

 

যোগান বিধি

আমরা প্রতিনিয়ত বাজারে জিনিসপত্র ক্রয়-বিক্রয় করে থাকি । একজন বিক্রেতা কখন তার দ্রব্যটি বিক্রয় করতে আগ্রহী হবেন? অবশ্যই ঐ দ্রব্যের দাম যখন বাজারে সবচেয়ে বেশি,তখনই একজন বিক্রেতা তার পণ্য বিক্রয় করতে চাইবেন। ধরি, আলুর কেজি যখন ১৫ টাকা, তখন বিক্রেতা ২ কুইন্টাল আলু বিক্রয় করে । দাম বেড়ে ২০ টাকা কেজি হলে বিক্রেতা বেশি পরিমাণে আলু সরবরাহ করতে চায় । মনে করি, তখন সরবরাহ হবে ৩০ কুইন্টাল । অর্থাৎ দ্রব্যের দাম বৃদ্ধির সাথে সাথে দ্রব্যের যোগানের পরিমাণ বাড়ে এবং দাম কমার সাথে সাথে দ্রব্যের যোগানের পরিমাণ কমে যায় । অতএব দাম ও যোগানের সম্পর্ক সমমুখী ।

দাম যেদিকে পরিবর্তিত হয়,যোগানও সেদিকে পরিবর্তিত হয় । অর্থাৎ অন্যান্য অবস্থা অপরিবর্তিত থাকলে (যেমন, উপকরণ দাম ও প্রযুক্তি স্থির, স্বাভাবিক সময় বিবেচিত), দাম বৃদ্ধি পেলে যোগানের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং দাম হ্রাস পেলে যোগানের পরিমাণ হ্রাস পায় । অর্থাৎ দামের সঙ্গে যোগানের এরূপ প্রত্যক্ষ সম্পর্ককে যোগান বিধি বলে ।

 

যোগান সূচি থেকে যোগান রেখা অঙ্কন

দ্রব্যের দাম বাড়লে যোগানের পরিমাণ বাড়ে, দাম কমলে যোগানের পরিমাণ কমে । দাম পরিবর্তনের ফলে যোগানের এ সমমুখী পরিবর্তনকে যোগান সূচিতে দেখানো যায় । যোগান সূচির একদিকে দ্রব্যের দাম এবং অন্যদিকে দ্রব্যের যোগানের পরিমাণ দেখানো হলো ।

 

 

সূচিতে দেখা যায়, কোনো দ্রব্যের প্রতি কুইন্টালের দাম ১০ টাকা হলে তার যোগান হয় ১০ কুইন্টাল । দাম বেড়ে ২০ টাকা, ৩০ টাকা ও ৪০ টাকা হলে যোগানের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় যথাক্রমে ২০ কুইন্টাল, ৩০ কুইন্টাল ও ৪০ কুইন্টাল । এভাবে যোগান সূচিতে যোগান বিধি প্রতিফলিত হয় ।

 

যোগান রেখা

কোনো দ্রব্যের দাম বাড়লে যোগানের পরিমাণ বাড়ে, দাম কমলে যোগানের পরিমাণ কমে। দাম পরিবর্তনের ফলে যোগানের পরিমাণের এ সমমুখী পরিবর্তনকে যখন রেখাচিত্রের মাধ্যমে দেখানো হয়,তখন তাকে যোগান রেখা বলে । যোগান সূচি থেকে কীভাবে যোগান রেখা অঙ্কন করা যায় তা নিচে দেখানো হলো ।

 

বাজার চাহিদা রেখা অঙ্কন

 

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

চিত্রে OX বা ভূমি অক্ষে দ্রব্যের যোগান বা পরিমাণ ও OY বা লম্ব অক্ষে দ্রব্যের দাম নির্দেশ করা হলো । দ্রব্যের দাম যখন ১০ টাকা, তখন দ্রব্যের যোগানের পরিমাণ ১০ কুইন্টাল; যা মিলিত হয়েছে A বিন্দুতে। এভাবে দ্রব্যের দাম যখন ২০ টাকা, ৩০ টাকা ও ৪০ টাকা, তখন দ্রব্যের যোগান যথাক্রমে ২০ কুইন্টাল, ৩০ কুইন্টাল এবং ৪০ কুইন্টাল । বিন্দুগুলো মিলিত হয়েছে যথাক্রমে B, C এবং D বিন্দুতে। এবার আমরা A,B,C ও D বিন্দুগুলোকে যোগ করলে পাব SS রেখা । এটিই যোগান রেখা ।

 

 

আরও পড়ূনঃ

Leave a Comment