ব্যাংক হিসাব খোলার ও পরিচালনার নিয়ম আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়। এই পাঠটি “এনসিটিবি মাধ্যমিক ৯ম ও ১০ম শ্রেণির অর্থনীতি” এর “অর্থ ও ব্যাংক ব্যবস্থা” সপ্তম অধ্যায় এর অন্তর্ভুক্ত।
ব্যাংক হিসাব খোলার ও পরিচালনার নিয়ম
সুজন তার অর্জিত আয়ের একটি অংশ ব্যাংকে জমা রাখার জন্য তার উপজেলা সদরে অবস্থিত সোনালী ব্যাংকের শাখা অফিসে যায়। সোনালী ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা মাসুদ সাহেব তাকে হিসাব খোলার ব্যাপারে সহযোগিতা করেন। মাসুদ সাহেব প্রথমে সুজনকে তিন ধরনের যেমন- (১) চলতি হিসাব, (২) সঞ্চয়ী হিসাব ও (৩) স্থায়ী হিসাবের ধারণা দেন। তিনি বলেন সব ধরনের হিসাব খোলার নিয়ম মোটামুটিভাবে এক । আমাদের দেশের সব ব্যাংকে হিসাব খোলার নিয়মাবলি প্রায় একই ধরনের । সুজন সঞ্চয়ী হিসাব খোলার সিদ্ধান্ত নেয়।
সে প্রথমে ব্যাংকের শাখা অফিস থেকে একটি আবেদনপত্র সংগ্রহ করে তাতে প্রয়োজনীয় তথ্য লিপিবদ্ধ করে। ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী তাকে (আবেদনকারীকে) শনাক্ত করার জন্য আবেদনপত্রে সায়েমের তথ্যসহ স্বাক্ষর নিতে হয় । কেননা সায়েমের উক্ত ব্যাংকে একটি হিসাব রয়েছে। সায়েমকে শনাক্ত প্রদানকারী বা পরিচয়দানকারী বলে । এছাড়া আবেদনপত্রে সুজন স্ত্রীকে নমিনি করে তার তথ্যও লিপিবদ্ধ করে (নমিনি বলতে বোঝায় ব্যাংক হিসাবে জমাকৃত অর্থ আমানতকারীর অবর্তমানে/মৃত্যুর পর তার মনোনীত যে বা যারা জমাকৃত অর্থের অধিকারী হবে) ।

পূরণকৃত আবেদনপত্রের সাথে সুজন ও তার স্ত্রীর (আবেদনকারী ও নমিনির) পাসপোর্ট আকৃতির সত্যায়িত ছবি এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের অনুলিপি সংযুক্ত করে । পূরণকৃত আবেদনপত্রটি মাসুদ সাহেবের কাছে জমা দেয় । তখন মাসুদ সাহেব তাকে ন্যূনতম ৫০০ টাকা ব্যাংকে জমা রাখতে বলেন (বিভিন্ন ব্যাংকের ক্ষেত্রে ন্যূনতম জমার পরিমাণ কমবেশি হতে পারে) । কিছু সময়ের মধ্যে মাসুদ সাহেব ব্যাংকের নিয়ম অনুসারে হিসাব খুলে একটি ব্যাংক হিসাব নম্বর সুজনকে প্রদান করেন এবং একটি চেকবই ও একটি জমাবই প্রদান করেন । সুজন পরবর্তীতে এ হিসাব নম্বরে জমাবই দ্বারা তার ইচ্ছামতো নগদ অর্থ, চেক, ব্যাংক ড্রাফট জমা দেয় (এছাড়া অনলাইনে দেশের ভেতর ও বাইরে থেকে হিসাব নম্বরে টাকা জমা দেওয়া যায়)।
জমাকৃত টাকা থেকে চেকের মাধ্যমে ও এটিএম কার্ডের মাধ্যমে (যেখানে এটিএম বুথ আছে) ব্যাংকের নিয়মের ভিত্তিতে টাকা তোলা যায় । বর্তমানে প্রায় সব ব্যাংকেই কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহার করা হয় । তাই আমানতকারী কোন কোন তারিখে কত টাকা তুলল এবং কত টাকা জমা দিল তার বিবরণী ব্যাংক থেকে সংগ্রহ করতে পারে (এমনকি ইচ্ছা করলে তার হিসাব বন্ধ করে দিতে পারে) । ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী আমানতকারী বর্তমানে ইন্টারনেটের মাধ্যমে লেনদেন-সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম সম্পাদন করতে পারে । সুজনের মতো সবাই সামর্থ্য অনুযায়ী যেকোনো ব্যাংকে যেকোনো ধরনের হিসাব খোলা ও পরিচালনার মাধ্যমে অর্থ জমাদান করতে এবং ওঠাতে পারে ।
আরও পড়ূনঃ