বাংলাদেশের অর্থনীতির বৈশিষ্ট্য আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়। এই পাঠটি “এনসিটিবি মাধ্যমিক ৯ম ও ১০ম শ্রেণির অর্থনীতি” এর “বাংলাদেশের অর্থনীতি” অষ্টম অধ্যায় এর অন্তর্ভুক্ত।
Table of Contents
বাংলাদেশের অর্থনীতির বৈশিষ্ট্য
প্রায় ২০০ বছরের ইংরেজ শোষণ ও চব্বিশ বছরের পাকিস্তানি শাসনের জাঁতাকলে নিষ্পেষিত হয়ে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়নি। উপরন্তু ১৯৭১ সালে দীর্ঘ নয় মাসের স্বাধীনতাযুদ্ধে অর্থনৈতিক অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। স্বাধীনতা লাভের পর চার দশক ধরে উন্নয়নের ফলে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। বাংলাদেশ এখন একটি নিম্নমধ্যম আয়ের উন্নয়নশীল দেশ। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নিম্নলিখিত প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য সহজেই লক্ষ করা যায় :
১. কৃষি
কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ খাত। কিন্তু অনুন্নত চাষ পদ্ধতি, উন্নত বীজ, সার, সেচ এবং কৃষিঋণের অভাব, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে উন্নত দেশের তুলনার আমাদের কৃষি উৎপাদন অনেক কম। ক্রমান্বরে এ অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। উন্নত বীজ, সার, কীটনাশক, সেচসুবিধা বাড়ছে। একই সাথে উৎপাদনও বাড়ছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনে সার্বিক কৃষিখাতের (ফসল, প্রাণিসম্পদ ও বনজ সম্পদ) অবদান প্রায় ১৬ শতাংশ হয়েছে। দেশের প্রমশক্তির মোট ৪৫.10 শতাংশ কৃষিখাতে নিরোজিক (এল. এফ. এস., ২০১৩ বিবিএস)।
২.শিল্প
বাংলাদেশের শিল্প উন্নয়নের গতি ধীর। তাই এ দেশের শিল্পায়নের গতিকে বাড়াতে আধুনিক শিল্পনীতি ঘোষণা প্রয়োজন। এ পরিপ্রেক্ষিতে শিল্পনীতি ২০১০ ঘোষণা করা হয়েছে। এ নীতির উদ্দেশ্য হলো- কর্মসংস্থান বাড়ানো, শিল্পায়নে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং দারিদ্রা কমানো। এই লক্ষগুলো বাস্তবায়নের জন্য সরকারি কর্মসূচি হলো- বিনিয়োে যাথা কমানো, কর মুক্ত করা, বেসরকারি বিনিয়োগ উত্সাহিত করা, মূলধনের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করা, বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বিদেশে বাজার সৃষ্টি এবং শ্রমনির্ভর শিল্প স্থাপন। এসব কর্মসূচির সুফল এখন পাওয়া যাচ্ছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সার্বিক শিল্পখাতের অবদান প্রায় ৩০.৪২ শতাংশ। মোট শ্রমশক্তির ২০.৭০ শতাংশ এ খাতে নিয়োজিত।
৩. মাথাপিছু আয়ের ক্রমবৃদ্ধি
এ দেশে কৃষি ও শিল্পের স্বল্প উৎপাদন, অধিক জনসংখ্যা এবং কাজের সুযোগ কম থাকায় মাথাপিছু আয় উন্নত দেশের তুলনায় কম। ২০১৬ সালে চলতি মূল্যে মাথাপিছু জাতীয় আয় ১৪৬৬ মার্কিন ডলার এবং মাথাপিছু জিডিপি ১৩৮৪ মার্কিন ডলার । আমাদের মাথাপিছু আয় ধীরগতিতে হলেও বাড়ছে ।
৪. জীবনযাত্রার ক্রমোন্নতি
স্বল্প আয়ের জন্য ২০১০ সালে আমাদের দেশের প্রায় ৩১.৫০ ভাগ লোক দারিদ্র্যসীমার নিচে জীবনযাপন করছিলেন। প্রতিবছর ১ শতাংশ হারে কমে তা বর্তমানে ২৪ শতাংশে নেমে এসেছে বলে ধরা হয়। ধীরগতিতে হলেও জীবনযাত্রার মান পূর্বাপেক্ষা উন্নত হওয়ায় মানুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ুষ্কাল ২০১৬ সালে ৭০.৭ বছরে উপনীত হয়েছে। সুপেয় পানি গ্রহণকারী ৯৭.৮০ শতাংশ এবং সাক্ষরতার হার (৭ বছর+) ৬২.৩ শতাংশ ।
৫. বিনিয়োগযোগ্য পুঁজির প্রবাহ বৃদ্ধি
আমাদের মাথাপিছু আয় কম বলে সঞ্চয় ক্ষমতা কম । তাই বিনিয়োগ বা পুঁজি গঠনের হারও কম । বর্তমানে দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার অনেক উদ্দীপনামূলক ও সহযোগিতামূলক নীতি ঘোষণা করেছে । এর ফলে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ ধীরগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে মোট বিনিয়োগ ছিল জিডিপির ২৯.৩৮ শতাংশ। বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে আমাদের কৃষি ও শিল্পের উৎপাদন বৃদ্ধি পায় । যা আমাদের দেশের দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়ক ।
৬. খাদ্যঘাটতি ও পুষ্টিহীনতা
কৃষিপ্রধান দেশ হলেও অধিক জনসংখ্যার কারণে এদেশে বহুদিন ধরে খাদ্যঘাটতি ও পুষ্টিহীনতা লক্ষ করা যায় । তাই সরকার বাংলাদেশকে বিভিন্ন প্রকার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে সার্বিক কৃষি খাতকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছে । এর ফলে বিগত কয়েক বছর ধরে খাদ্যশস্য উৎপাদন-ব্যবস্থায় উন্নত বীজ, সার এবং প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অধিক ফসল উৎপাদন সম্ভব হয়েছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে খাদ্যশস্যের উৎপাদন হয়েছিল ৩৮৪.১৯ লাখ মেট্রিক টন ।
৭. জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার হ্রাস
বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। সর্বশেষ আদমশুমারী অনুযায়ী এ দেশে মোট জনসংখ্যা ১৪ কোটি ৯৭ লাখ ৭২ হাজার ৩৬৪ (২০১১ সালের হিসাব অনুযায়ী)। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ১০১৫ জন এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১.৩৭%, যা ২০০১ সালে ছিল ১.৪৮%। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ক্রমশ হ্রাস পেলেও আয়তনের দিক দিয়ে অনেক ছোট এই দেশটি জনসংখ্যার দিক দিয়ে বিশ্বে নবম বৃহত্তম দেশ । ২০১৭ সালের বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা অনুযায়ী আমাদের জনসংখ্যা প্রায় ১৫ কোটি ৮৯ লক্ষ এবং মোট আয়তন প্রায় ১,৪৭,৫৭০ বর্গ কিলোমিটার। সেই অনুযায়ী বর্তমান জনসংখ্যার ঘনত্ব হচ্ছে প্ৰতি বৰ্গ কিলোমিটারে প্রায় ১০৭৭ জন।
৮. বেকারত্ব
আমাদের দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির তুলনায় সঞ্চয় কম বলে বিনিয়োগ কম হয় । ফলে মূলধন গঠনের হার কম । প্রয়োজনীয় মূলধনের অভাবে কৃষি ও শিল্প খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত। ফলে এ দেশে বেকারত্ব দেখা যায় । ঢাকা ইপিজেড তবে রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলে (EPZ: Export Processing Zone) বেসরকারি ও সরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৈদেশিক বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করার জন্য বিভিন্ন উদ্দীপনামূলক ও সহযোগিতামূলক নীতি ঘোষণা করায় বৈদেশিক বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়ছে এবং অর্থনৈতিক অঞ্চল চালু হচ্ছে। যার ফলে বেকার সমস্যা অদূর ভবিষ্যতে আরো কমে যাবে বলে আশা করা যায় ।
৯. প্রাকৃতিক ও মানবসম্পদের ব্যবহার বৃদ্ধি
দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও জনগণের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে প্রাকৃতিক সম্পদ গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক অবকাঠামোগত উপাদান। বর্তমানে এসব সম্পদের আবিষ্কার ও ব্যবহার পূর্বের তুলনায় বুদ্ধি পেয়েছে। প্রাকৃতিক গ্যাস ও অপরিশোধিত পেট্রোলিয়াম এবং কয়লা ও অন্যান্য খনিজ সম্পদ খাতের সমন্বিত অবদান স্থির মূল্যে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১.৬৮ শতাংশ হয়েছে। প্রাকৃতিক গ্যাস দেশের মোট বাণিজ্যিক জ্বালানি ব্যবহারের শতকরা প্রায় ৭৫ ভাগ পূরণ করে। আমাদের দেশে এযাবৎ আবিষ্কৃত ২৬টি গ্যাসক্ষেত্রের মধ্যে বর্তমানে ২০টি গ্যাসক্ষেত্রের ১০১টি কূপ হতে গ্যাস উত্তোলিত হচ্ছে।
উৎপাদিত গ্যাস বিদ্যুৎ উৎপাদনে সর্বাধিক ব্যবহৃত হয় । দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণকল্পে ইস্টার্ন রিফাইনারির পরিশোধন ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং গভীর সমুদ্রে শোধিত ও অপরিশোধিত জ্বালানি তেল খালাসের জন্য এসপিএম (Single Point Mooring) কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। দেশের মোট ৫টি কয়লাক্ষেত্রের (রংপুরের খালাশপীর, দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া, ফুলবাড়ি ও দীঘিপাড়া এবং বগুড়ার জামালগঞ্জ) মোট মজুদ প্রায় ২৭০০ মিলিয়ন টন। উত্তোলিত কয়লার ৬৫ ভাগ বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত হয় ।
কয়লা খনি মানবসম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে । এদের মধ্যে পরিবার পরিকল্পনা, নারী ও শিশু, সমাজকল্যাণ, যুব ও ক্রীড়া উন্নয়ন, সংস্কৃতি, শ্রম ও কর্মসংস্থানক্ষেত্রে উন্নয়ন উল্লেখযোগ্য ।
১০. বৈদেশিক বাণিজ্যের ঘাটতি
ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার বহুমুখী চাহিদা পূরণ এবং উন্নয়নের জন্য আমাদের ভোগ্যপণ্য ও মূলধনী দ্রব্য আমদানি বাবদ প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হয়, যা আমাদের রপ্তানি আয়ের তুলনায় অনেক বেশি। এ জন্য বাণিজ্যের ভারসাম্যে অব্যাহত ঘাটতি দেখা যায় । বর্তমানে বিভিন্ন দেশে আমাদের দেশের পণ্যসামগ্রীর রপ্তানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাণিজ্যিক ঘাটতির পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে । এছাড়া প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থের (রেমিটেন্স) কারণে আমাদের চলতি হিসাব খাতে ঘাটতি দূর হয়ে উদ্বৃত্ত সৃষ্টি হয়েছে।
১১. বৈদেশিক সাহায্যের উপর নির্ভরশীলতা হ্রাস
অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য আমাদের যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন, তা দেশের অভ্যন্তর থেকে সংগ্রহ করা যায় না । তাই বিদেশি সাহায্যের উপর নির্ভর করতে হয় । তবে আশার কথা হলো বর্তমানে বৈদেশিক সাহায্যের উপর নির্ভরশীলতার হার হ্রাস পাচ্ছে । কেননা এসব সাহায্যের অপর্যাপ্ততা, অনিশ্চয়তা, প্রতিকূল শর্তসমূহ ও সময়ক্ষেপণের দরুণ আমাদের উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত হয়। তাই অভ্যন্তরীণ উৎসের উপর নির্ভরতা বাড়ছে,যা ইতিবাচক অগ্রগতি হিসেবে চিহ্নিত করা হয় ।
১২. অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবকাঠামোর ক্রমোন্নতি
দেশের উৎপাদন বৃদ্ধি, উৎপাদনের উপকরণ ও উৎপাদিত পণ্যের সুষ্ঠু বাজারজাতকরণ এবং দ্রব্যমূল্যের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য অর্থনৈতিক অবকাঠামো যেমন সড়ক, রেল ও নৌপথ, বিদ্যুৎ ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সরকার এসব অবকাঠামো উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
সরকারের উল্লেখযোগ্য কর্মসূচির মধ্যে পদ্মা সেতু নির্মাণ কার্যক্রম, ঢাকা শহরে যানজট নিরসনে ২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ, নিরাপদ নৌযান চলাচল নিশ্চিতকরণ, বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার এবং দ্বিতীয় একটি সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে একটি আধুনিক টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক তৈরির জন্য কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে ।
আমাদের দেশের মানবসম্পদ উন্নয়নে সামাজিক অবকাঠামো যেমন শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, গবেষণা, জনস্বাস্থ্য, সাংস্কৃতিক চেতনা ও মূল্যবোধ প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বর্তমান সরকার শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নের লক্ষ্যে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ প্রণয়ন করেছে এবং জনস্বাস্থ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০১১-২০১৬ মেয়াদে সমন্বিত স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি উন্নয়ন খাত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে ।
১৩. বেসরকারিকরণ কর্মসূচি
আমাদের দেশে মিশ্র অর্থনীতি চালু থাকলেও দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে বাজার অর্থনীতি প্রতিষ্ঠার আওতায় বেসরকারি খাতের উন্নয়নের উপর সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। এ উদ্দেশ্যে বিভিন্ন নীতি ও সংস্কার কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। ১৯৯৩ সালে বেসরকারীকরণ বোর্ড (বর্তমানে প্রাইভেটাইজেশন কমিশন) গঠনের পর থেকে জুন ২০১২ পর্যন্ত মোট ৭৭টি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বেসরকারীকরণ করা হয়েছে । তন্মধ্যে ৫৬টি প্রতিষ্ঠান সরাসরি বিক্রির মাধ্যমে এবং ২১টি প্রতিষ্ঠান/কোম্পানির শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে বেসরকারীকরণ করা হয়েছে । বিশেষজ্ঞদের মতে এর ফলাফল মিশ্র প্রকৃতির ।
১৪. পরিকল্পনা গ্রহণ
আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সরকারি ও বেসরকারি কর্মসূচির সমন্বয় সাধন এবং সম্পদের সুষম বণ্টন ও ব্যবহারের জন্য বাস্তবায়নযোগ্য উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়োজন । এ লক্ষ্যে সরকার স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী সামনে রেখে রূপকল্প ২০২১-এর আলোকে “বাংলাদেশ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা রূপরেখা (২০১০-২০২১)” শীর্ষক পরিকল্পনা দলিল প্রণয়ন করেছে । এর মৌলিক উদ্দেশ্য হচ্ছে উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জন, দারিদ্র্য বিমোচন, বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করা এবং আঞ্চলিক বৈষম্যসহ সকল প্রকার বৈষম্য দূর করা ।

উপরিউক্ত বৈশিষ্ট্যের আলোকে বলা যায়, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা পূর্বের তুলনায় বেশ উন্নতি লাভ করেছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন গতিশীল কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন হচ্ছে । শিক্ষা ও প্রযুক্তির প্রসারের মাধ্যমে কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন শ্রমিক ও উদ্যোক্তা শ্রেণি তৈরি হচ্ছে । যারা স্বকর্মসংস্থানের মাধ্যমে দেশের উৎপাদন বৃদ্ধিতে এবং সামাজিক কুসংস্কার দূর করতে ভূমিকা পালন করছে, তবে সুশাসনের অভাব এবং ক্রমবর্ধমান আয় ও সম্পদ বৈষম্যের কারণে বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভাবনা কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
আরও পড়ূনঃ