খনিজ, বনজ ও পানি সম্পদ ক্লাসটি পলিটেকনিক এর সমাজবিজ্ঞান (৬৫৮১১) বিষয়ের পাঠ। নিয়মিত ক্লাস পেতে গুরুকুল সমাজবিজ্ঞান এর উদ্যোগের সাথে যুক্ত থাকুন।
Table of Contents
খনিজ, বনজ ও পানি সম্পদ
খনিজ সম্পদ
ভূতাত্ত্বিক দিক থেকে বাংলাদেশের ভূভাগের বেশিরভাগই বঙ্গীয় অববাহিকার (Bengal Basin) অন্তর্গত। দেশের উত্তর, উত্তরপূর্ব ও পূর্বাংশে এ অববাহিকা টারশিয়ারি যুগের ভাঁজযুক্ত পাললিক শিলাস্তর দ্বারা গঠিত (প্রায় ১২ভাগ)। উত্তরপশ্চিম, মধ্য-উত্তর ও মধ্য-পশ্চিমাংশে অববাহিকার প্রায় ৮ ভাগ প্লাইসটোসিন যুগে উত্থিত পলল এবং অবশিষ্ট ৮০ শতাংশ ভূভাগ অসংহত বালি, পলি ও কর্দম দ্বারা গঠিত হলোসিন যুগের সঞ্চয়ন দ্বারা আবৃত।
বাংলাদেশে প্যালিওসিন মহাকালের তুরা স্তরসমষ্টিকে প্রাচীনতম উন্মুক্ত শিলাস্তর হিসেবে শনাক্ত করা গিয়েছে। দেশের উত্তরপশ্চিমাংশে খননকার্য পরিচালনাকালে প্রাচীনতর শিলাস্তর যেমন, মেসোজোয়িক ও প্যালিওজোয়িক স্তরসমষ্টি এবং প্রি-ক্যাম্ব্রিয়ান ভিত্তিস্তরের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।

ভূ-পৃষ্ঠে অথবা ভূগর্ভের কোনো স্থানে সঞ্চিত খনিজ সম্পদের অবস্থান মূলত সংশ্লিষ্ট স্থানের ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য ও সময়কাল দ্বারা নির্ণীত হয়ে থাকে। ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের ভূতাত্ত্বিক পরিবেশে সঞ্চিত বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদসমূহ হচ্ছেঃ প্রাকৃতিক গ্যাস, কয়লা, চুনাপাথর, কঠিন শিলা, নুড়িপাথর, গন্ডশিলা (Boulder), কাচবালি, নির্মাণকার্যে ব্যবহূত বালু, চীনামাটি, ইটের মাটি, পিট এবং সৈকত বালি ভারি মণিক (Beach Sand Heavy Minerals)।
দেশের অয়েল ও গ্যাস উইন্ডোর মধ্যে বিদ্যমান টারশিয়ারি বরাইল শিলাদল থেকে উৎপন্ন হয়েছে প্রাকৃতিক গ্যাস ও খনিজ তেল। উৎপন্ন হওয়ার পর এ প্রাকৃতিক গ্যাস ও তেল উপরের দিকে বহু কিলোমিটারব্যাপী বিস্তৃত শিলাস্তর ভেদ করে উত্থিত হয়ে নিওজিন ভূবন ও বোকাবিল স্তরসমষ্টির মধ্যস্থিত সুবিধাজনক বেলেপাথর আধারে সঞ্চিত হয়। নুড়িপাথর, কাচবালি, নির্মাণ বালি, পিট ও সৈকত বালি প্রভৃতি খনিজ হলোসিন পললে পাওয়া যায়। দেশের উত্তরাঞ্চলের ক্ষুদ্র পাহাড়সমূহে বিদ্যমান প্লাইসটোসিন পললে পাওয়া যায় চীনামাটি বা কেওলিন।
দেশের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে ভূ-পৃষ্ঠের অল্প গভীরতায়ও চীনামাটি ও কাচবালির মজুত আবিষ্কৃত হয়েছে। সীমিত মাত্রার উত্তোলনের মাধ্যমে চুনাপাথর, নির্মাণ বালি, কাচবালি, নুড়িপাথর, চীনামাটি ও সৈকত বালি আহরণ করা হচ্ছে। অন্তর্ভূপৃষ্ঠীয় মজুত থেকে চীনামাটি ও কাচবালি এখনও উত্তোলন করা হয় নি। তবে অন্তর্ভূপৃষ্ঠীয় কয়লা ও কঠিন শিলা উত্তোলনের কাজ এগিয়ে চলেছে।
বনজ সম্পদ
অরণ্য বা বন থেকে প্রয়ােজনীয় যে সম্পদ পাওয়া যায়, যা মূলত মানুষের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, সেগুলিকে বনজ সম্পদ বলে। যেমন মধু, মােম, আঠা, ভেষজ ওষুধ, গাছের তেল, জ্বালানি ও আসবাবপত্র, যানবাহন তৈরির মূল্যরান কাঠ প্রভৃতি।
বনজ সম্পদ কোনো দেশের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার সবচেয়ে বড় উপাদান। আমাদের দেশের বনভূমির পরিমাণ শতকরা প্রায় ১৭ ভাগ। তারপরও আমরা এই বনজ ঝোপঝাড়, কাঠ প্রভৃতি আসবাবপত্র, গৃহনির্মাণ, শিল্প ও জ্বালানির ক্ষেত্রে ব্যবহার করি। ফলাফল হিসেবে বনজ পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। বন উজাড় হচ্ছে, মাটি উন্মুক্ত হয়ে পড়ছে। ফলে মৃত্তিকা ক্ষয়ে যাচ্ছে দ্রুত সাথে মৃত্তিকার উর্বরতা হ্রাস পাচ্ছে।
পানি সম্পদ
পানি সম্পদ বা জল সম্পদ হল পানির সেই সমস্ত উৎসসমূহ যেগুলি মানুষের নিয়মিত ব্যবহারের জন্য অতিপ্রয়োজনীয়। কৃষি, শিল্প, গার্হস্থ্য ব্যবহার এবং পরিবেশ রক্ষণাবেক্ষণসহ মনুষ্যজীবনের সর্বক্ষেত্রেই পানির ব্যবহার অপরিহার্য। এবং এইসকল কাজে ব্যবহারের ক্ষেত্রে যেটি অত্যাবশ্যক সেটি হল পরিশোধিত বিশুদ্ধ পানি। পৃথিবীতে লভ্য পানির প্রায় ৯৭.৫% হল লবণাক্ত এবং বাকি মাত্র ২.৫% বিশুদ্ধ। এই স্বল্পপরিমাণ শুদ্ধ পানির আবার দুই-তৃতীয়াংশই কঠিন অবস্থায় অর্থাৎ তুষার, হিমশৈল, ইত্যাদি রূপে বিদ্যমান। অবশিষ্ট তরল পানির অধিকাংশই ভূগর্ভস্থ এবং অতি অল্পপরিমাণ পানি ভূপৃষ্ঠস্থ জলাশয়ে লভ্য।
খনিজ, বনজ ও পানি সম্পদ নিয়ে বিস্তারিত ঃ
আরও পড়ূনঃ
- এনসিটিবি মাধ্যমিক ৯ম ও ১০ম শ্রেণির অর্থনীতি
- যমুনা লাইফের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ | সারা সপ্তাহের খবর